বর্ষার মৌসুম আসতেই সেই একই চিত্র, সড়কপথে বিচ্ছিন্ন বরাক, নাগালের বাইরে বিমান ভাড়া, রেলপথ স্বাভাবিক না হওয়ায় বাতিল একের পর এক ট্রেন, চরমে দুর্ভোগ

বর্ষার মৌসুম আসতেই সেই একই চিত্র, সড়কপথে বিচ্ছিন্ন বরাক, নাগালের বাইরে বিমান ভাড়া, রেলপথ স্বাভাবিক না হওয়ায় বাতিল একের পর এক ট্রেন, চরমে দুর্ভোগ

মে 2, 2024 - 00:05
মে 3, 2024 - 15:49
 0
বর্ষার মৌসুম আসতেই সেই একই চিত্র, সড়কপথে বিচ্ছিন্ন বরাক, নাগালের বাইরে বিমান ভাড়া, রেলপথ স্বাভাবিক না হওয়ায় বাতিল একের পর এক ট্রেন, চরমে দুর্ভোগ
বর্ষার মৌসুম আসতেই সেই একই চিত্র, সড়কপথে বিচ্ছিন্ন বরাক, নাগালের বাইরে বিমান ভাড়া, রেলপথ স্বাভাবিক না হওয়ায় বাতিল একের পর এক ট্রেন, চরমে দুর্ভোগ

Also read in English

এক্সপ্লোর ভ্যালী এডিটোরিয়াল

বছরের পর বছর যায় আসে, সরকার ও পরিবর্তন হয়। কিন্তু বরাকবাসীর ভাগ্যে কোন পরিবর্তন হয় না। বর্ষার মৌসুম আসতে না আসতেই চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। সেই ট্রেডিশন যেন সমানে চলিতেছে।

এবারও পরিস্থিতির সেই একই। কোনো পরিবর্তন নেই। বরং যতদিন যাচ্ছে ততই যেন পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এখনো কিন্তু পুরোপুরি বর্ষার মৌসুম শুরুই হয়নি। ‌ কিন্তু এর মধ্যেই প্রকৃতির রুদ্ররূপে নাজেহাল শিলচর সহ গোটা উপত্যকার সাধারণ মানুষ।

বছরের এই সময়টা শিলচরের জন্য যেন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড মানুষের ঘরবাড়ি। তার মধ্যে জমা জলের বীভৎসতা। এর সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে ভাঙ্গা রাস্তাঘাট।

সব মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা শহরবাসীর। তবে এই প্রথম নয়, কয়েক দশক থেকেই বর্ষার এই মৌসুমে ভুক্তভোগী শিলচর সহ গোটা উপত্যকার মানুষ। এই মুহূর্তে সড়কপথে গুয়াহাটি থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বরাক।

মঙ্গলবার রাতের প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে সোনাপুরে ভূমিধস হয়েছে। একাধিক জায়গায় পাহাড় ভেঙ্গে পড়েছে রাস্তায়। ফলে রাস্তার দু'পাশে সারিসারি ভাবে আটকা পড়ে আছে হাজার হাজার যানবাহন। ‌

দুর্ভোগের এখানেই শেষ নয়, লামডিং বদরপুর রেল রুটে জাটিঙ্গা লাম্পুর স্টেশনে কদিন আগে লাইনচ্যুত হয়েছিল ট্রেন। এর ফলে ট্র্যাকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেই রুটে এখনো রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। প্রতিদিনই বাতিল হচ্ছে একের পর এক ট্রেন। ‌

সড়ক ও রেলপথের এমন অবস্থার ফায়দা লুটে রাতারাতি বিমান ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে বিভিন্ন এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো ‌। শিলচর গুয়াহাটি রুটে বিমান ভাড়া গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ থেকে ১৯ হাজারে।যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। অবশ্য এই প্রথম নয়, গত বছরও এভাবেই বিমানের ভাড়া আকাশ ছোঁয়া করে দিয়েছিল এয়ারলাইন্স কোম্পানি গুলো। 

এই মুহূর্তে সড়ক রেল এবং আকাশ, সবদিক থেকেই যেন একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে বরাক। ‌ এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের জীবনে। জিনিসপত্রের দাম রাতারাতি বেড়ে গেছে। পরিস্থিতি যদি দ্রুত স্বাভাবিক না হয় তাহলে জিনিসপত্রের দাম আরো বাড়বে।

এমনটা কিন্তু এবারই প্রথম হচ্ছে না, বছর পর বছর বর্ষার মৌসুম আসলেই এই সমস্যার ভুক্তভোগী উপত্যকার মানুষ। ‌ তবে এই দুর্ভোগ এখানেই শেষ হচ্ছে না। কারণ আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ৪/৫ মে পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ও শিলা বৃষ্টি হবে।

এমনিতেই জমা জলে নাজেহাল শিলচরবাসী। জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা যেন একেবারে ভেন্টিলেশনে।শহরের ন্যাশনাল হাইওয়ে পয়েন্ট, সোনাই রোড গত কদিন থেকেই জমা জলে আবদ্ধ। তার মধ্যে রাস্তার অবস্থা খুবই শোচনীয়। লাইফ লাইন বলে পরিচিত হাসপাতাল রোডের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র রোড শো-র জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় হাসপাতাল রোডের রাস্তা মেরামত করা হয়েছিল। তবে গত তিন চার দিনে ফের পুরনো ছন্দে ফিরে এসেছে হাসপাতাল রোডের রাস্তা।  শহরের অধিকাংশ অলিগলিতেই জমা জলে ঘর থেকে বের হতেই পারছেন না সাধারণ মানুষ।

 এই হচ্ছে আচ্ছে দিনের নমুনা ! দিনের পর দিন জমা জলে আবদ্ধ থাকার পরও চিত্তরঞ্জন লেনের বাসিন্দাদের সমস্যার সমাধান করতে পারেননি কোনো নেতা, মন্ত্রী অথবা প্রশাসন।‌ যার ফলে এবার ভোট বয়কট করেছেন চিত্তরঞ্জন লেনের বাসিন্দারা।

শহরের শিববাড়ি রোডের শোচনীয় অবস্থার কথা তো বলে লাভ নেই। কয়েক দশক থেকেই ভাঙ্গা রাস্তাঘাট দিয়েই যাতায়াত করছেন শিববাড়ি রোডের বাসিন্দারা। ‌ সরকার পরিবর্তন হলেও তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। একই অবস্থা শহরের সোনাই রোডের বাসিন্দাদেরও।

জমা জলে নাজেহাল এলাকাবাসী। এ নিয়ে প্রতিদিনই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রল হচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। জল জীবন প্রকল্প নিয়ে‌ চলছে রসিকতাও।

 তারপরও টনক নড়ছে না জন প্রতিনিধিদের। উল্টো সোশ্যাল মিডিয়ায় 'কাজ হচ্ছে কাজ হচ্ছে' বলে দাবি করা হচ্ছে! ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকা পালন করছে বিরোধীরাও।

ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েই নিজের দায়িত্ব সারছেন বিরোধী নেতারা। চলছে একে অপরকে দোষারোপের পালাও। আর এসবের মধ্যে প্রতিদিন জমা জল ও আই সি ইউ তে থাকা ট্রাফিক ব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

আপনার প্রতিক্রিয়া কি?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow